১০ টি বেস্ট জাপানের দর্শনীয় স্থান এবং ভ্রমণ গাইড 2023

হ্যালো বন্ধুরা, আশা করি সবাই ভালো আছেন। আপনি যেহুতু আমাদের জাপানের দর্শনীয় স্থান পোস্টটিতে কিল্ক করেছেন। এর মানে আপনি জাপান সর্ম্পকে জানতে আগ্রহি। আজকের এই আর্টিকেল এ আমরা জাপানের সকল দর্শনীয় স্থান সর্ম্পকে পুরোপুরি জানার চেষ্টা করব। তবে চলুন শুরু করি।

জাপানের দর্শনীয় স্থানে ভ্রমণ করতে যাওয়া মানে হল আপনি আপনার স্বপ্নের জগতে পৌঁছেনোর চেষ্টা করছেন। জাপান দেশটি অনেক সুন্দর, সমৃদ্ধ এবং প্রয়োজনীয় শহরগুলির সমন্বয়ে তৈরি করা হয়েছে। জাপানের সমস্ত জায়গা জুড়েই প্রচুর প্রাকৃতিক সৌন্দর্য ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে। এখানে আপনি অপূর্ব সংস্কৃতি, প্রাকৃতিক দৃশ্য, মনোরম শ্রীমঙ্গলসহ সকল দৃশ্য দেখতে পাবেন। তবে চলুন, আমরা আজকে জাপানে ভ্রমণ করার জন্য পাড়ি জমাই । এবং জাপানের দর্শনীয় স্থান ও জাদুময় সকল মনোরম স্থানগুলির সম্পর্কে বিস্তারিত আরো ও জেনে নেই।

জাপানের দর্শনীয় স্থানগুলোর নামঃ –

১) টোকিও

টোকিও হল জাপানের সবচেয়ে বড় শহর এবং জাপানের রাজধানীর নাম হল টোকিও । বর্তমান সময়ে শপিং, বিনোদন, সংস্কৃতি ও বৈচিত্র্যময় সকল খাবারের জন্য টোকিও শহরের জনপ্রিয়তা দিন দিন বেড়েই চলছে। টোকিও এমন একটি জায়গা যেখানে প্রকৃতিক সৌন্দর্য ও মহিমা সম্পূর্ণভাবে সংমিশ্রণে তৈরি হয়েছে। টোকিও একটি অসম্ভব সুন্দর শহর, যেখানে সুন্দর মড়ের স্কায়লাইন, মডার্ন আর্কিটেকচার, এবং ঐতিহ্যবাহী বিমানবন্দর স্থাপিত হয়েছে। টোকিও একটি রাজধানী শহর হওয়ার পাশাপাশি প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের জন্যও অনেক পরিচিত। জাপানের দর্শনীয় স্থান এর মধ্যে টোকিও শহর প্রধান।

উদাহরণস্বরূপ বলা যায় , চিরসবুজ উদ্যান, যমেশ্বর বাতিকদেশ এবং উড়ন্ত বন্যার বাঙ্গালি উদ্যানসহ এমন কিছু জায়গা আছে যা আপনাকে প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে মন ভরিয়ে দিতে পারে। শুধু এই নয়, এর সাথেই টোকিওতে রয়েছে প্রচুর সংস্কৃতিক সম্পদ এবং বিভিন্ন বিনোদন কেন্দ্র। যা যে কাউকে মন মুগ্ধ করে তুলতে পারে। টোকিওতে একটি ভ্রমণ অবশ্যই করা উচিত। সত্যি বলছি, টোকিও ভ্রমন হতে পারে আপনার অন্যতম একটি ভ্রমনযাত্রা ।

২) কিয়োতো

কিয়োতো জাপানের সর্বপ্রথম প্রাচীন শহর এবং এটি বর্তমানে আধুনিক শহর হিসেবে পরিচিতি লাভ করেছে। কিয়োতো অত্যন্ত সুন্দর একটি জায়গা । কিয়োতো তার সৌন্দর্য সারা বছরই ছড়িয়ে থাকে। তারপর ও কিয়োতো ঘুরতে যাওয়ায় সবচেয়ে ভালো সময় হচ্ছে মার্চ মাস। এই মার্চ মাসে জাপানে চেরি ফুল ফুটে থাকে। যার সৌন্দর্য এক কথায় অসাধারণ। কিয়োতোতে আপনি বিভিন্ন ধরণের আকর্ষণীয় স্থান দেখতে পারবেন। নানা রঙ বেরঙের ফুলের বাগান, বুদ্ধিস্ট মন্দির, শিংসেন শ্রাইন ও রূপন্তরিত নগর কেন্দ্র ইত্যাদি।

জাপানের আইকনিক ফুল বাগানের নাম হল তেময়া পার্ক। কিয়োতোতে একটি প্রাকৃতিক সৌন্দর্যপূর্ণ কনামি লেক রয়েছে। এছাড়াও কিয়োতোতে বিভিন্ন মেট্রোয়ান এলিভেটরে উঠে ট্রাভেল করে টোজি টাওয়ার এ যেতে পারবেন। যাওয়ার সময় আপনি ওসাকা শহরের সুন্দর দৃশ্য উপভোগ করতে পারবেন। সব মিলিয়ে কিয়োতোর সৌন্দর্য আপনার মন জুড়াবেই।

Also Read

• কানাডার শেষ্ঠ ১০ টি দর্শনীয় স্থান

• ইতালির ১০ টি সেরা দর্শনীয় স্থান

৩) নারা পার্ক

জাপানের দর্শনীয় স্থান এর মধ্যে নারা একটি অন্যতম জায়গা। নারা জাপানের প্রাকৃতিক সৌন্দর্যপূর্ণ ছোট্ট একটি শহর। নারা মিঠা হরিণের জন্মস্থল হিসাবে পরিচিত। এখানে প্রাকৃতিক দৃশ্য এবং শান্তিরময় সকল জায়গার জন্য ভীষন ভাবে পরিচিত। এছাড়া নারায় আপনি চমৎকার পাহাড়, নদ-নদী, ঝরনা ও প্রাকৃতিক সৌন্দর্য সহ পিকনিক স্পট পাবেন। নারা শহরে নানা ধরনের সংস্কৃতি রয়েছে, যেখানে আপনি ঘুরে বেড়াতে পারবেন। এছাড়া নারা পার্কে আপনি বিভিন্ন জাদুঘর দেখতে পাবেন, যেখানে রয়েছে জাদু প্রদর্শনী, ম্যাজিকাল গ্যার্ডেন, রঙিন জলপ্রপাত, শিশুদের প্লে এলিয়ের ইত্যাদি কিছু আকর্ষণীয় খেলনা এবং এখানে একটি বিনোদন কেন্দ্র রয়েছে।

সাধারণত, জাপানে নারা পার্ক বাচ্চাদের জন্য একটি আকর্ষণীয় জায়গা। প্রতিদিন প্রায় অনেক মানুষজন আসে, যারা সবাই মিলে জাদুঘরের মজা উপভোগ করে থাকে। জাপানে সকল জাদুঘরের মধ্যে নারা পার্ক বহুমুখী বিনোদন পার্ক হিসেবে গড়ে উঠেছে।

৪) ওসাকা

ওসাকা হল জাপানের দ্বিতীয় বৃহত্তম শহর এবং হেডকোয়ার্টার শহর। এখানে আপনি আধুনিক আর্কিটেকচার, মার্কেট, রেস্তোরাঁ এবং অন্যান্য মনোরম পরিবেশ উপভোগ করতে পারবেন। জাপান গেলে অবশ্যই ওসাকা ক্যাসটেল এবং ওসাকা একুইজি পার্কে একবার হলেও ভ্রমণ করা উচিত। কারন এখানে রয়েছে প্রাকৃতিক সৌন্দর্য ভরপুর । ওসাকা টাওয়ারের পেছনে একটি মন্দির রয়েছে। এটি অনেক প্রচীন একটি মন্দির। সাধারণত, ওসাকা একটি ব্যস্ত নগরী, যেখানে অনেক বড় বড় বাণিজ্যিক কেন্দ্র, বিশ্ববিদ্যালয়, সাংস্কৃতিক সুযোগ, উচ্চ পাঠশালা এবং আকর্ষণীয় দর্শনীয় স্থান রয়েছে।

৫) কিওতো ওসাকা এবং নারা

এই তিনটি স্থানের জন্য জাপান ভীষণভাবে পরিচিতি পেয়েছে। জাপানে ভ্রমন এ গেলে এই তিনটি জায়গায় একটি ট্রিপ প্ল্যান করতে পারেন। কিওতোতে আপনি ঐতিহ্যবাহী মন্দির ও নিউ শহরের সাথে ঐচ্ছিক কনামী লেকের মধ্যে সানসেট বোটে যাত্রা করতে পারবেন। ওসাকাতে আপনি অসাধারণ খাবার, বিক্রেতাদের শপিং ও উচ্চ অবস্থানের উচ্চতা উপভোগ করতে পারেন। নারায় আপনি চমৎকার সংস্কৃতি, ঐচ্ছিক রেস্তোরাঁ এবং প্রাকৃতিক দৃশ্য পাবেন। যা আপনাকে ভীষন মুগ্ধ করবে। যারা ভ্রমণ ভালবাসে তাদের জন্য জাপান হতে পারে একটি আর্দশময় জায়গা।

জাপানের এই সকল স্থানগুলি ভ্রমণ করার পর, এটি আপনাদের কাছে একটি স্মরণীয় ভ্রমণ হয়ে থাকাবে আশা করি। যদি আপনি জাপানে ভ্রমণ করতে চান, তাহলে অবশ্যই এই জায়গা গুলোতে ‍যাওয়ার জন্য একটি সময়সূচি তৈরি করে নিতে পারেন। যাতে আপনি সম্পূর্ন রূপে এই সকল জায়গা উপভোগ করতে পারেন।

জাপান ভ্রমণ কি খুবই ব্যয়বহুল ?

এবার চলুন জাপান ভ্রমণ খরচ সম্পর্কে কথা বলা যাক। হা অব্যশই, জাপান হল পৃথিবীর মধ্যে অনেক ব্যায়বহুল একটি দেশ। তাই এখানে একটু আপনাকে বেশিই খরচ করতে হবে। তবে, খরচ সর্ম্পূই আপনার ভ্রমণের উপর নির্ভর করবে। নিচে জাপান ভ্রমণের জন্য কিছু ব্যায়ের তালিকা দেওয়া হলঃ

• পরিবহন খরচঃ জাপানে যাওয়ার জন্য আপনি পরিবহন খরচ তো করতে হবে। যেমন বিমান, ট্রেন, বাস ইত্যাদি। ট্রান্সপোর্টেশন খরচ ভ্রমণের মধ্যে সবচেয়ে বেশি হয়ে থাকে।
• হোটেল ও অবাসস্থানঃ জাপানে ভাল হোটেলে থাকার জন্য আপনাকে পরিমাণমত খরচ করতে হবে। জাপানে বিভিন্ন শ্রেণীর হোটেল আছে। আপনি আপনার পছন্দমত সুযোগ-সুবিধা বুঝে এবং বাজেটের উপর নির্ভর করে বাছাই করে থাকতে পারবেন।
• খাদ্য ও রেস্টুরেন্টঃ জাপানে খাদ্য ও রেস্টুরেন্ট খরচ সর্ম্পূন আপনার উপর নির্ভর করবে। আপনার বাজেট যদি বেশি হয়ে থাকে, তাহলে আপনি অনেক ভাল সুস্বাদু খাদ্য পাবেন। আপনার বাজেট কম হলেও সমস্যা নাই । কম খরচেও এখানে ভাল খাবার পাওয়া যায়।
• আকর্ষণীয় স্থানে ভ্রমণঃ জাপানের দর্শনীয় স্থানে বা আকর্ষণীয় সকল স্থানে ভ্রমণ করতে চাইলে আপনাকে অবশ্যই টিকেট কিনতে হবে, যেমন মিউজিয়াম, মন্দির, পার্ক, ঐতিহ্যবাহী স্থান ইত্যাদি। এগুলোর জন্য ও আপনার খরচ করতে হবে।

এছাড়াও আপনার ব্যাক্তিগত পছন্দ অনুযায়ী বিভিন্ন বিনোদন কার্যক্রম, শপিং এবং আইটেম কেনার জন্য এক্সটা বাজেট রাখতে হবে। জাপানের দর্শনীয় স্থানে বেশিরভাগ ক্রেডিট কার্ড গ্রহণযোগ্য হয়, কিন্তু বিভিন্ন ছোই দোকানে ও চলমান বাজারে নগদ অর্থ ব্যবহারের প্রয়োজন হতে পারে। সুতরাং, আগে থেকেই নগদ কিছু অর্থ তুলে নিতে পারেন।

এই সকল মূল্যবান বিষয়গুলি অব্যশই মনে রাখবেন। আপনি যেহুতু জাপানের দর্শনীয় স্থানে ভ্রমণ পরিকল্পনা করছেন, তখন আপনার এই ধারনা গুলো থাকা দরকার। একটি ভালো পরিকল্পনা ও বাজেট ম্যানেজমেন্ট করে আপনি জাপানে সুন্দরভাবে ভ্রমণ করতে পারেন। এবং জাপান উপভোগ করতে পারবেন। ধন্যবাদ

আমাদের শেষ কথা,

আশা করি আমরা আপনাদের জাপানের দর্শনীয় স্থান সর্ম্পকে বুঝাতে সক্ষম হয়েছি। আজকের আর্টিকেল টি যদি আপনাদের ভাল লেগে থাকে, তাহলে অব্যশই একটি কমেন্ট করে যাবেন। এবং পৃথিবীর মধ্যে আরোও দর্শনীয় স্থান সর্ম্পকে জানতে আমাদের ফলো করতে পারেন। এছাড়া আপনি যদি টেক লাভার হয়ে থাকেন তাহলে এই ওয়েবসাইট Tech Plex থেকে ঘুরে আসতে পারেন। ধন্যবাদ